সৌদি আরবে হজ্ব করতে গেলে যে সকল গুরুত্বপুর্ন তথ্য আপনার কাজে আসতে পারে..
(১) সৌদি আরবে অবস্থানকালে ট্রাফিক আইন মেনে চলুন, সিগন্যাল পড়লে রাস্তা পার হোন। রাস্তা পার হওয়ার সময় অবশ্যই ডানে-বায়েঁ দেখেশুনে সাবধানে পার হবেন। কখনো দৌড় দেবেন না।
(২) হাঁচি কিংবা কাশি দেওয়ার সময় অবশ্যই আপনার মুখ ঢেকে নিন।
(৩) শরীরের কোন স্থান কেটে গেলে অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম ব্যবহার করুন এবং ক্ষতস্থানটি প্লাস্টার কিংবা ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে নিন।
(৪) সৌদিআরবে অবস্থানকালে কোনো চাঁদা ওঠানো, সাহায্যে চাওয়া, ভিক্ষা করা দন্ডনীয় অপরাধ। সুতরাং এগুলো থেকে বিরত থাকুন।
(৫) মনে রাখবেন, মসজিদে নববী ও মসজিদুল হারামের সীমানার মধ্যে ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
(৬) কাবা শরীফ ও মসজিদে নববীর ভেতরে কিছুদুর পরপর পবিত্র কোরআন মজিদ রাখা আছে আর পাশে জমজম পানি (স্বাভাবিক ও ঠান্ডা) খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
(৭) হজ্বযাত্রীদের যাবতীয় তথ্য, দেশের পরিবার-পরিজনের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে সংবাদ পৌঁছানো যায়। হারানো হজ্বযাত্রীদের খুঁজে পাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশ হজ্ব মিশনে বিজনেস অটোমেশন লি. আইটি হেল্প ডেস্ক সাহায্য করে।
(৮) কোনো ধরনের অসুস্থতা কিংবা দুর্ঘটনায় পড়লে বাংলাদেশ হজ্ব মিশনের মেডিকেল সদস্যদের (চিকিৎসক) সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
(৯) মদিনা থেকে যদি মক্কায় আসেন, তাহলে ইহরামের কাপড় সঙ্গে নিতে হবে।
(১০) আরাফাতের ময়দানে অনেক প্রতিষ্ঠান বিনা মূল্যে খাবার, জুস, ফল ইত্যাদি দিয়ে থাকে। ওই সব খাবার আনতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কি হয়, তাই সাবধান থাকবেন।
(১১) মুজদালিফায় রাতে থাকার জন্য প্লাস্টিকের পাটি পাওয়া যায়। মক্কায়ও কিনতে পারবেন।
(১২) আরাফাতের ময়দান থেকে যদি হেটে মুজদালিফায় আসেন, পথে টয়লেট সেরে নেবেন। কেননা মুজদালিফার টয়লেটে অনেক ভিড় লেগে যায়।
(১৩) হজ্ব মন্ত্রনালয় মিনার গুরুত্বপূর্ন স্থানে (যেখানে হজ্বযাত্রীদের সহজে চোখে পড়ে) কম্পিউটার-নিয়ন্ত্রিত ইলেকট্রনিক বিলবোর্ডে পৃথিবীর প্রায় ১৮টি ভাষায় বিভিন্ন জরুরি দিকনির্দেশনা ও গুরুত্বপূর্ন তথ্য বাংলায় প্রচার করে।
(১৪) হজ্বের বেশির ভাগ সময় হজ্বযাত্রীদের মিনায় তাঁবুতে অবস্থান করতে হয়। তাই মিনাকে এক হিসেবে তাঁবুর শহর বলা যায়। চারদিকে তাঁবু আর তাঁবু-সব তাঁবু দেখতে একই রকম।
(১৫) মোয়াল্লিম নম্বর বা তাঁবু নম্বর জানা না থাকলে যে কেউই হারিয়ে যেতে পারেন। বিশেষ করে বাংলাদেশি হজ্বযাত্রীদের বড় অংশ বৃদ্ধ বয়সে হজ্ব করতে আসেন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে রাখেন না। অনেকে হারিয়ে ফেলেন গন্তব্য। বাংলাদেশি হজ্বযাত্রী কিছু আছেন সচেতন, তাঁরা বাদে বাকিরা তাঁবু নম্বর মনে রাখতে পারেন না। সব তাঁবু দেখতে একই রকম হওয়ায় পথ হারিয়ে ফেলেন। বাংলাদেশের পতাকা বা বাংলায় কথা বলা শুনে প্রবাসী বাংলাদেশি হজ্বকর্মীরা তাঁদের গন্তব্য পৌঁছে দেন। এ সমস্যা এড়ানোর জন্য যে তাঁবুতে অবস্থান করেন, সেসব তাঁবু চিহ্নিত করে নিন।
(১৬) মোয়াল্লিম অফিস থেকে তাঁবুর নম্বরসহ কার্ড দেওয়া হয়; তা সাথে রাখুন। বাইরে বের হওয়ার সময় সঙ্গে রাখুন।
(১৭) হজ্বযাত্রী সচেতন থাকলে হারিয়ে যাওয়ার কোনো ভয় নেই। অনেক বাংলাদেশি হারিয়ে যাওয়ার কারনে হজ্বের আহকাম বা নিয়ম-কানুন ঠিকমতো পালন করতে পারেন না।
(১৮) মক্কা-মদিনায় প্রচুর বাংলাদেশি হোটেল আছে। মক্কার হোটেলগুলোর নাম ঢাকা, এশিয়া, চট্টগ্রাম, জমজম ইত্যাদি। এসব হোটেলে ভাত, মাছ, মাংস, সবজি, ডাল-সবই পাওয়া যায়। হোটেল থেকে পার্সেলে বাড়িতে খাবার নিয়ে দুজন অনায়াসে খেতে পারেন।
(১৯) মক্কা-মদিনায় প্রচুর ফলমূল ও ফলের রস পাওয়া যায়। এগুলো কিনে খেতে পারেন।
(২০) মক্কা-মদিনায় অনেক বাংলাদেশি কাজ করেন, তাই ভাষাগত কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কেনাকাটার সময় দরদাম করে কিনবেন।
(২১) হজ্বের সময় প্রচুর হাঁটাচলা করতে হয়, পকেটে টাকা থাকলেও যানবাহন পাওয়া যায় না।
(২২) মিনায় চুল কাটার লোক পাওয়া যায়। নিজেরা নিজেদের চুল কাটবেন না, এতে মাথা কেটে যেতে পারে।
(২৩) মিনায় কোনো সমস্যা হলে হজ্বযাত্রীদের সেবা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ হজ্ব মিশনের তাঁবুতে যোগাযোগ করবেন।
(২৪) মক্কা-মদিনা থেকে বাংলাদেশে কম খরচে ফোন করা যায় (কোনো বাংলাদেশিকে বললে দেখিয়ে দেবেন)। সৌদি আরবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে চাইলে সঙ্গে সেট নিয়ে যাবেন, ওখানে (হজ্ব প্যাকেজ) মোবাইল সিম কিনতে পাওয়া যায়। বর্তমানে বাংলাদেশেও সৌদি সিম পাওয়া যায়।
(২৫) হজ্বের আগে ও পরে আরও উমরাহ করতে চাইলে তানঈম মসজিদ এ (উমরাহ মসজিদে) গিয়ে উমরাহর নিয়ত করে আসা যায়। কাবা শরীফের বাইরে বাস অথবা ট্যাক্সিতে উমরাহ মসজিদে যাওয়া যায়।
(২৬) মসজিদে নববীতে নারীদের জন্য আলাদা নামাজ পড়ার জায়গা আছে।
হে আল্লাহ্, বাংলাদেশ সহ সারা পৃথিবীর সকল হজ্বযাত্রীদের সহীসালামতে হজ্ব করার তৌফিক দান করুন এবং আমাদেরকেও হজ্ব করার তৌফিক দান করুন।
0 Comments